October 10, 2024, 2:21 am

সংবাদ শিরোনাম
আসন্ন শারদীয়া দুর্গাপূজা শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রশাসন ও জনগণের প্রীতি আহ্বান – পর্ব ৮ প্রশাসন সংস্থা ব্রিটিশ আইনের মাধ্যমে শাসন ব্যবস্থা চলতে পারে না-পর্ব ৭ মাতৃভূমির এক ইঞ্চি জমি ছাড় দেওয়া হবে না, পর্ব ৬ স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি রক্ষা করতে হলে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে(পর্ব-৫) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জামায়াত নেতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে সশস্ত্র ট্রেনিং এর প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী অভিভাবক ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কমিটির (পর্ব- ৪) ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে গড়তে হলে সংস্কার প্রয়োজন=== বৈষম্য বিরোধী অভিভাব ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে অদ্ভুতুরে কাণ্ডকীর্তি ভোলা বোরহানউদ্দিনে প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকগণের ১০ম গ্রেডের দাবিতে মানববন্ধন

শাওয়াল মাসের ছয়টি রোযা: সারা বছর রোযার ছোয়াব পাওয়ার একটি সূবর্ণ সূযোগ

আলহাজ্ব মুফতি মোঃ খোরশেদ আলমঃ

হযরত আবূ আইয়ূব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেছেন-যে ব্যক্তি রমযানের সওমব্ৰত পালনের পর শাওয়ালেরও ৬টি সওম পালন করল, (পুণ্যের দিক দিয়ে) পূর্ণ একটি বছর সওম পালন করল।
ছহীহ মুসলিম ১১৬৪, তিরমিযী ৭৫৯, আবূ দাউদ ২৪৩৩, ইবনু মাজাহ ১৭১৬,
وَعَنْ أَبِي أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيِّ – رض الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ – صلى الله عليه وسلم – قَالَ: «مَنْ صَامَ رَمَضَانَ, ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّا مِنْ شَوَّالٍ كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ». رَوَاهُ مُسْلِمٌ
صحيح. رواه مسلم (116
গ্রন্থঃ সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত]
অধ্যায়ঃ ৬/ রোযা (সাওম) (كتاب الصوم عن رسول الله ﷺ)
হাদিস নম্বরঃ ৭৫৯
# শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোযা পালন করা
আবু আইয়ুব আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক রামাযান মাসে রোযা পালন করলো, তারপর শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোযা পালন করলো, সে লোক যেন সম্পূর্ণ বছরই রোযা পালন করলো। – হাসান সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭১৬), মুসলিম
আবু হুরাইরা ও সাওবান (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ আইয়ূব (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন। একদল বিশেষজ্ঞ আলিম এই হাদীসের ভিত্তিতে শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোযা পালন করাকে মুস্তাহাব মনে করেন।
ইবনুল মুবারাক বলেন, প্রতি মাসে তিন দিন রোযা পালনের মত এটিও মুস্তাহাব। এ রোযা রামাযানের রোযার পরপরই পালনের কথা কোন কোন হাদীসে উল্লেখ আছে। তাই তিনি এই ছয়টি রোযা শাওয়াল মাসের শুরুর দিকে পালন করাকে বেশি পছন্দীয় মনে করেছেন তিনি আরও বলেছেনঃ শাওয়াল মাসের ভিন্ন ভিন্ন দিনের রোযা পালন করাও জায়িয আছে।
আবু ঈসা বলেন, বর্ণনাকারী আবদুল আযীয ইবনু মুহাম্মাদ এই হাদীসটি সাফওয়ান ইবনু সুলাইম ও সা’দ ইবনু সাঈদের সূত্রে উমার ইবনু সাবিত হতে আবু আইয়ূব (রাঃ)-এর সনদে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন। শুবা (রাঃ) এই হাদীস ওয়ারকা ইবনু উমার হতে সা’দ ইবনু সাঈদ (রাহঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এই সাদ ইবনু সাঈদ হলেন ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল-আনসারীর ভাই। একদল হাদীস বিশেষজ্ঞ তার স্মৃতিশক্তির সমালোচনা করেছেন।
হাসান বাসরী হতে বর্ণিত আছে যে, তার নিকট শাওয়ালের ছয়টি রোযার উল্লেখ করা হলে তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ তিনি পূর্ণ বৎসরের পরিবর্তে এই মাসের রোযার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সনদ সহীহ্, মাকতু।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
باب مَا جَاءَ فِي صِيَامِ سِتَّةِ أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا سَعْدُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّا مِنْ شَوَّالٍ فَذَلِكَ صِيَامُ الدَّهْرِ ‏”‏ ‏.‏ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَثَوْبَانَ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي أَيُّوبَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَقَدِ اسْتَحَبَّ قَوْمٌ صِيَامَ سِتَّةِ أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ بِهَذَا الْحَدِيثِ ‏.‏ قَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ هُوَ حَسَنٌ هُوَ مِثْلُ صِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ‏.‏ قَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ وَيُرْوَى فِي بَعْضِ الْحَدِيثِ ‏”‏ وَيُلْحَقُ هَذَا الصِّيَامُ بِرَمَضَانَ ‏”‏ ‏.‏ وَاخْتَارَ ابْنُ الْمُبَارَكِ أَنْ تَكُونَ سِتَّةَ أَيَّامٍ فِي أَوَّلِ الشَّهْرِ ‏.‏ وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ إِنْ صَامَ سِتَّةَ أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ مُتَفَرِّقًا فَهُوَ جَائِزٌ ‏.‏ قَالَ وَقَدْ رَوَى عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ وَسَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عُمَرَ بْنِ ثَابِتٍ عَنْ أَبِي أَيُّوبَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَذَا ‏.‏ وَرَوَى شُعْبَةُ عَنْ وَرْقَاءَ بْنِ عُمَرَ عَنْ سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ هَذَا الْحَدِيثَ ‏.‏ وَسَعْدُ بْنُ سَعِيدٍ هُوَ أَخُو يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الأَنْصَارِيِّ وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ أَهْلِ الْحَدِيثِ فِي سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ ‏.‏ حَدَّثَنَا هَنَّادٌ قَالَ أَخْبَرَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ الْجُعْفِيُّ عَنْ إِسْرَائِيلَ أَبِي مُوسَى عَنِ الْحَسَنِ الْبَصْرِيِّ قَالَ كَانَ إِذَا ذُكِرَ عِنْدَهُ صِيَامُ سِتَّةِ أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ فَيَقُولُ وَاللَّهِ لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ بِصِيَامِ هَذَا الشَّهْرِ عَنِ السَّنَةِ كُلِّهَا ‏.‏
গ্রন্থঃ সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ৮/ সওম (রোযা) (كتاب الصوم)
হাদিস নম্বরঃ ২৪৩৩
#  শাওয়াল মাসের ছয় দিন সওম পালন
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবী আবূ আইয়ূব (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রমাযান মাসের সওম রাখার পর শাওয়াল মাসের ছয়টি সওম রাখলো, সে যেন সারা বছর সওম রাখলো।
. মুসলিম, তিরমিযী, দারিমী। ইমাম তিরমিযী বলেন: হাদীসটি হাসান সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
بَابٌ فِي صَوْمِ سِتَّةِ أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ حَدَّثَنَا النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ، وَسَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ ثَابِتٍ الْأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ، صَاحِبِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ صَامَ رَمَضَانَ، ثُمَّ أَتْبَعَهُ بِسِتٍّ مِنْ شَوَّالٍ، فَكَأَنَّمَا صَامَ الدَّهْرَ صحيح
গ্রন্থঃ সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায়ঃ ৭/ সিয়াম বা রোযা (كتاب الصيام)
হাদিস নম্বরঃ ১৭১৫
শাওয়াল মাসের ছয় দিনের রোযা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মুক্তাদাস সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতরের পর ছয় দিন রোযা রাখলো, তা পূর্ণ বছর রোযা রাখার সমতুল্য। ‘‘কেউ কোন সৎকাজ করলে, সে লতার দশ গুণ পাবে’’ (সূরা আন‘আমঃ ১৬০)।
আহমাদ ২১৯০৬, দারেমী ১৭৫৫, ইরওয়াহ ৪/১০৭। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
بَاب صِيَامِ سِتَّةِ أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ الْحَارِثِ الذَّمَارِيُّ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا أَسْمَاءَ الرَّحَبِيَّ عَنْ ثَوْبَانَ مَوْلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ مَنْ صَامَ سِتَّةَ أَيَّامٍ بَعْدَ الْفِطْرِ كَانَ تَمَامَ السَّنَةِ {مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا}
গ্রন্থঃ সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায়ঃ ৭/ সিয়াম বা রোযা (كتاب الصيام)
হাদিস নম্বরঃ ১৭১৬
শাওয়াল মাসের ছয় দিনের রোযা।
আবূ আইউব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রমযান মাসের রোযা রাখার পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোযা রাখবে, তা যেন সারা বছর রোযা রাখার সমতুল্য।
মুসলিম ১১৬৪, তিরমিযী ৭৫৯, আবূ দাউদ ২৪৩৩, আহমাদ ২৩০২২, ২৩০, ইরওয়াহ ৯৫০, দারেমী ১৭৫৪, বায়হাকী ৪/৩০২, সহীহ আবী দাউদ ২১০২, তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী সা’দ বিন সাঈদ সম্পর্কে ইমাম তিরমিযি বলেন, তার হিফযের পূর্বে হাদিস বর্ণনার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আহমাদ বিন শু’আয়ব আন নাসায়ী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২২০৮, ১০/১৬২ নং পৃষ্ঠা) হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
بَاب صِيَامِ سِتَّةِ أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ نُمَيْرٍ عَنْ سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عُمَرَ بْنِ ثَابِتٍ عَنْ أَبِي أَيُّوبَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ بِسِتٍّ مِنْ شَوَّالٍ كَانَ كَصَوْمِ الدَّهْرِ
সাওবান রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, রমজানের রোজা দশ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দু’মাসের রোজার সমান। সুতরাং এ হলো এক বছরের রোজা।
অপর রেওয়ায়েতে আছে, যে ব্যক্তি রমজানের রোজা শেষ করে ছয় দিন রোজা রাখবে সেটা তার জন্য পুরো বছর রোজা রাখার সমতুল্য। (যে সৎকাজ নিয়ে এসেছে, তার জন্য হবে তার দশ গুণ। সূরা আন‘আম)
লেখক : সিনিয়র শিক্ষক, দারুল উলুম কাকরাইল, রমনা, ঢাকা।

ডিটেকটিভ/২৯ মে ২০২০/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর